স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল: বরিশালের গৌরনদী উপজেলার কটকস্থল এলাকায় অবস্থিত আরিফ ফিলিং স্টেশনে দক্ষিণাঞ্চলের শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী হীরা মাঝির নেতৃত্বে সশস্ত্র হামলার ঘটনা ঘটেছে। শনিবার সকালে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়ে পাম্পের কর্মচারীদের জিম্মি করে ১১ লাখ ৯০ হাজার টাকা লুট করে নেয় দুর্বৃত্তরা।
পাম্প মালিক হারুন অর রশিদ বেপারীর মেয়ে পপি বাদী হয়ে গৌরনদী মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় হীরা মাঝি (৪৫), মানিক মাঝি (৫২), সাদ্দাম মাঝি (৩৫), মনির মাঝি (৪০), সিফাত মাঝি (২৫), তুহিন মাঝি (২৮), সুজন মীর (৪২) সহ ৪০-৫০ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করা হয়।
পুলিশ ইতোমধ্যে ২ নম্বর আসামি মানিক মাঝি ও ৩ নম্বর আসামি সিফাত মাঝিকে গ্রেপ্তার করে বরিশাল আদালতে সোপর্দ করেছে।
চাঁদাবাজি ও সুদের ফাঁদে ফেলে দখল পরিকল্পনা
ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ, ২০১৭ সালের ৯ সেপ্টেম্বর হারুন অর রশিদ বেপারী আরিফ ফিলিং স্টেশনের কার্যক্রম শুরু করেন। ব্যবসায়িক সংকটে পড়ে তিনি মাসিক ২৪ হাজার টাকা সুদের বিনিময়ে কটকস্থল গ্রামের মানিক মাঝির কাছ থেকে ২৭ লাখ টাকা ঋণ নেন। এরপর থেকেই মানিক মাঝি ও তার ভাই হীরা মাঝি, যিনি বরিশালের একজন কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত, তাদের স্বজনদের নিয়ে পাম্পটি দখলের ষড়যন্ত্র শুরু করেন।
গত ২৫ মার্চ (শনিবার) সকাল ১০টার দিকে হীরা মাঝির নেতৃত্বে অন্তত ৪০-৫০ জনের একটি দল দেশীয় অস্ত্র নিয়ে পাম্পে হামলা চালায়। তারা কর্মচারীদের ভয়ভীতি ও গালিগালাজ করে পাম্প দখল করে নেয় এবং রাত ৮টার দিকে কাউন্টারে ঢুকে জিম্মি করে দিনের বিক্রির ২ লাখ ৯০ হাজার টাকা এবং ব্যাংকে জমা না দেওয়া ৯ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয়।
হুমকি ও প্রাণনাশের আশঙ্কা
বাদী পপি জানান, হামলাকারীরা কর্মচারীদের হুমকি দিয়ে বলে, “রাতের টাকা হিসাব করে রাখো, সকালে এসে নিয়ে যাব।” এমন হুমকির ফলে কর্মচারীরা আতঙ্কে রয়েছেন।
পুলিশ বলছে: অভিযান চলছে
গৌরনদী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ ইউনুস মিয়া বলেন, “মামলার পরপরই অভিযান চালিয়ে দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।”
এ বিষয়ে হীরা মাঝির বক্তব্য জানতে তার মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।